উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১/০৬/২০২৩ ১০:৩২ পিএম

দীর্ঘদিন থেকে একটি চক্র রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরি করে দিয়ে আসছিল। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জানা থাকলেও চক্রটিকে সহজে ধরা যাচ্ছিল না। অবশেষে সেই চক্রের সাতজনকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। চক্রটি রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিতেন। এর বিনিময়ে তারা বিভিন্ন স্থানের ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মসনদ ও পাসপোর্ট তৈরি করে দিতেন। এই চক্রের সঙ্গে এসবি ও পাসপোর্ট অফিসকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটি চক্র জড়িত। তারাই এসব ভুয়া পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে সহায়তা করে থাকেন।

মঙ্গলবার (২০ জুন) চক্রটির সাত সদস্যকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- হাবিব উল্লাহ ওরফে আবু হোজাইফা ওরফে আবু বক্কর (৪৯), মঞ্জু মোর্শেদ (২৯), সাফায়েত আহমেদ সাহিদ (৩২), সামিউল হক ওরফে রাজু, নুর আলম (২৭), আবেদ হোসেন (২৭) ও রিয়াজুল হক ওরফে রিয়াজ (১৯)। তাদের মধ্যে রিয়াজ রোহিঙ্গা নাগরিক। এসময় তাদের কাছ থেকে নয়টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, তিনটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ও তিনটি পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ উদ্ধার করা হয়।

বুধবার (২১ জুন) দুপুরে রাজধানীর জনসন রোডে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি জানান, চক্রটির মূল হোতা হলেন হাবিব উল্লাহ ওরফে আবু হোজাইফা ওরফে আবু বকর। আবু বকরই মূলত কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রিয়াজের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংগ্রহ করতেন। যারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট, জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র করতে আগ্রহী। তবে তাকে এ কাজে সহায়তা করতেন মনজু ও তার সহযোগী রাজু এবং নুর আলম। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানের ভুয়া ঠিকানা দিয়ে পাসপোর্ট করা হত। চক্রটির সঙ্গে একটি ট্রাভেল এজেন্সিও জড়িত। এজেন্সিটি পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গাদের ট্রাভেল ভিসা করিয়ে দিত। চক্রটির হাত ধরে অনেকে রোহিঙ্গা পাসপোর্ট পেয়ে বিদেশে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে এসবি ও পাসপোর্ট অফিসের একটি চক্র জড়িত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে তারা।

তিনি আরও জানান, চক্রটিকে ধরা সম্ভব হতো না। সম্প্রতি ফাতেমা নামে এক নারীর পাসপোর্টের এর তথ্য যাচাই করতে আশুলিয়ায় যায় এসবির এক সদস্য। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার হয়ে আবেদ হোসেন নামে একজন কাগজপত্র নিয়ে আসেন এবং তিনি দাবি করেন ফাতেমা তার স্বজন। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে তাকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নুর আলমকে আটক করা হয়। এই দুজনের তথ্যের ভিত্তিতে বাকীদের গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে গ্রেফতারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। চক্রটি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীক লোকজনকে কেন্দ্র করে এসব পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াও জন্মসনদ তৈরি করতেন। এর বিনিময়ে তারা ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে।

চক্রটির সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত তারা কতজন রোহিঙ্গাকে এই পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মসনদ দিয়েছে তা জানা যায়নি। পুরো চক্রটিকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।

আসাদুজ্জামান বলেন, চক্রটিকে গ্রেফতারের পর আমরা পাসপোর্ট ও এসবি অফিস কেন্দ্রীক দালাল চক্রের কিছু লোকজনের সন্ধান পেয়েছি। তাদের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। চক্রটিকে ভিসা প্রেসেসিংয়ে সহায়তা করত একটি এজেন্সি এবং পাসপোর্ট ও ডিএসবির কেন্দ্রীয় একটি চক্র জড়িত আছে। এই চক্রটির সন্ধানও আমরা করছি। পাসপোর্ট বা ডিএসবি অফিসের যদি কেউ জড়িত থাকে অবশ্যই আমরা তাকে গ্রেফতার করব।

এসময় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহাবুদ্দিন কবিরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত

খেলাভিত্তিক শিক্ষায় ব্র্যাকের তথ্য বিনিময় অনুষ্ঠান

শিশুদের খেলাভিত্তিক শেখা, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও মনোসামাজিক বিকাশ নিশ্চিতে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ...

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ধর্মীয় প্রচার কার্যক্রমে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। ...